ঢাকা   রোববার, ২৭ অক্টোবর ২০২৪ | ১২ কার্তিক ১৪৩১

একজন দলিতের জীবন কি এই সমাজে কোনো মূল্য নেই?

Daily Inqilab অনলাইন ডেস্ক

২৭ অক্টোবর ২০২৪, ০১:০৪ পিএম | আপডেট: ২৭ অক্টোবর ২০২৪, ০১:০৪ পিএম

ভারতে বর্ণবিদ্বেষ ও সামাজিক বৈষম্য এমন এক বাস্তবতা যা বহু বছর ধরে চলমান। এই বৈষম্যের সবচাইতে বেশি শিকার হলো দলিত সম্প্রদায়, যারা সমাজের সর্বনিম্ন স্তরের বলে বিবেচিত। সম্প্রতি বিহারের মুজাফফরপুর জেলার এক দলিত ১৪ বছর বয়সী কিশোরীকে মৃত অবস্থায় ১২আগস্ট পাওয়া গেছে।এই ঘটনা গ্রামে চরম উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে।ঘটনাটি দলিত সমাজের সমস্যার আরও এক বাস্তব উদাহরণ হয়ে উঠেছে।

মুজাফফরপুরের একটি ছোট্ট গ্রামে ১৪ বছর বয়সী কিশোরীকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। তার পরিবার দাবি করেছে, কিশোরীকে ধর্ষণ করে হত্যা করা হয়েছে। ঘটনার পর থেকে পরিবার ও গ্রামবাসী এই ঘটনায় সুবিচারের দাবিতে সোচ্চার হয়ে উঠেছে। কিন্তু প্রভাবশালী ব্যক্তিদের প্রভাব ও পুলিশের অদক্ষ তদন্ত প্রক্রিয়ায় এই মামলা নিয়ে বেশকিছু বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে।

ঘটনার বিবরণে জানা যায়,মুজাফফরপুরের পারু অঞ্চলের একটি গ্রামে ১১ আগস্ট রাতে ৬ জন অস্ত্রধারী ব্যক্তি দলিত পরিবারের ঘরে প্রবেশ করে এবং কিশোরীকে অপহরণ করে। পরদিন সকালে তার মৃতদেহ পাওয়া যায় গ্রামের পাশের ধানক্ষেতে। তার হাত-পা বাঁধা ছিল এবং শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়। কিশোরীর মা জানান, অভিযুক্ত প্রধান ব্যক্তি সঞ্জয় রাই একজন প্রভাবশালী জমিদার এবং ওই কিশোরীর প্রতি তার কুপ্রবৃত্তি ছিল। তিনি কিশোরীকে বিয়ের প্রস্তাব দেন এবং প্রত্যাখ্যানের পর পরিবারকে হুমকি দেন।

পুলিশি তদন্তে প্রথমে ধর্ষণের অভিযোগটি খারিজ করে দেওয়া হয় এবং কেবল হত্যা মামলা হিসেবে গ্রেফতার করা হয় অভিযুক্ত ও চারজন দলিত ব্যক্তিকে। এতে পরিবারের সদস্যরা এবং দলিত অধিকার রক্ষাকারী সংগঠনগুলো ন্যায়বিচারের দাবি জানিয়ে আন্দোলন শুরু করে। তাদের মতে, প্রভাবশালী ব্যক্তিদের চাপের কারণে ধর্ষণ মামলা তুলে দেওয়ার চেষ্টা চলছে। পুলিশি তদন্তে সঠিক প্রমাণ সংগ্রহের অভাবে এবং পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণের অভাবে ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত বাধাগ্রস্ত হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

মামলার তদন্ত এখনও চলমান থাকলেও, ঘটনার পর দলিত পরিবারের সদস্যরা নিরাপত্তার অভাবে গ্রাম ছেড়ে চলে যেতে বাধ্য হন। সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা ও ন্যায়বিচারের অনুপস্থিতি তাদের জীবনকে অনিশ্চয়তায় ফেলে দিয়েছে।

ভারতে দলিত সম্প্রদায়ের উপর নির্যাতন এবং সামাজিক বৈষম্য চলমান ঘটনা,এবং যা সহিংসতা ও সামাজিক নিপীড়ন এক অমীমাংসিত ইস্যু। এই ঘটনায় ন্যায়বিচার প্রাপ্তির জন্য দলিত পরিবারটির যন্ত্রণা ও লড়াই যেমন স্পষ্ট, তেমনি এই ঘটনাটি ভারতে দলিত সম্প্রদায়ের অবস্থা সম্পর্কে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নও উত্থাপন করেছে – একজন দলিতের জীবন কি এই সমাজে কোনো মূল্য নেই? সূত্র : আল-জাজিরা।

 

 


বিভাগ : আন্তর্জাতিক


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

আরও পড়ুন

নাগেশ্বরীতে ইউনিয়ন ভূমি অফিসে চুরি ও আগুন লাগানোর ঘটনায় দুই জন গ্রেফতার

নাগেশ্বরীতে ইউনিয়ন ভূমি অফিসে চুরি ও আগুন লাগানোর ঘটনায় দুই জন গ্রেফতার

বিএনপি-জামায়াতের বাড়িঘরে হামলার নির্দেশ দিলেন হাসিনা

বিএনপি-জামায়াতের বাড়িঘরে হামলার নির্দেশ দিলেন হাসিনা

ভক্তরা ভুলে যায়নি লিয়াম পেইনকে, একটার পর একটা গান জায়গা করে নিচ্ছে ব্রিটিশ সংগীতের টপ চার্টে

ভক্তরা ভুলে যায়নি লিয়াম পেইনকে, একটার পর একটা গান জায়গা করে নিচ্ছে ব্রিটিশ সংগীতের টপ চার্টে

মানিকগঞ্জে ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি গ্রেফতার

মানিকগঞ্জে ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি গ্রেফতার

কালীগঞ্জে ইউপি চেয়ারম্যান গ্রেপ্তার

কালীগঞ্জে ইউপি চেয়ারম্যান গ্রেপ্তার

জুলাই বিপ্লবে শহীদদের জীবনী পাঠ্যপুস্তকে লিপিবদ্ধ করতে হবে : জামায়াত আমির

জুলাই বিপ্লবে শহীদদের জীবনী পাঠ্যপুস্তকে লিপিবদ্ধ করতে হবে : জামায়াত আমির

নবীরা বলে গেছেন, কিয়ামতের শুরু হবে মধ্যপ্রাচ্যেই: ট্রাম্প

নবীরা বলে গেছেন, কিয়ামতের শুরু হবে মধ্যপ্রাচ্যেই: ট্রাম্প

গাজায় আরও ৪৫ জন নিহত,চার সেনার মৃত্যুতে শোক প্রকাশ ইরানের

গাজায় আরও ৪৫ জন নিহত,চার সেনার মৃত্যুতে শোক প্রকাশ ইরানের

ইরানে ইসরায়েলি হামলায় জরুরি বৈঠকের আহ্বান জাতিসংঘের

ইরানে ইসরায়েলি হামলায় জরুরি বৈঠকের আহ্বান জাতিসংঘের

বাংলা একাডেমির নতুন সভাপতি আবুল কাসেম ফজলুল হক

বাংলা একাডেমির নতুন সভাপতি আবুল কাসেম ফজলুল হক

তিনি যুদ্ধ নয়, শান্তি চান, ট্রাম্পকে সমর্থন জানালেন আরব ও মুসলিম নেতারা

তিনি যুদ্ধ নয়, শান্তি চান, ট্রাম্পকে সমর্থন জানালেন আরব ও মুসলিম নেতারা

পণবন্দীদের মুক্তির শর্তে নেতাদের গাজা থেকে সরে যাওয়ার ইসরাইলি প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান হামাসের

পণবন্দীদের মুক্তির শর্তে নেতাদের গাজা থেকে সরে যাওয়ার ইসরাইলি প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান হামাসের

কালিয়াকৈরে রেললাইনের পাশে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান

কালিয়াকৈরে রেললাইনের পাশে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান

'অসাধারণ ১০ দক্ষিণি সিনেমা যা পাল্টে দিতে পারে আপনাকে'

'অসাধারণ ১০ দক্ষিণি সিনেমা যা পাল্টে দিতে পারে আপনাকে'

ওসমানীনগরে মহাসড়কের পাশ থেকে যুবকের লাশ উদ্ধার

ওসমানীনগরে মহাসড়কের পাশ থেকে যুবকের লাশ উদ্ধার

নোয়াখালীতে মা-মেয়েকে ঘর থেকে তুলে নিয়ে ‘সংঘবদ্ধ ধর্ষণ’,গ্রেফতার ২

নোয়াখালীতে মা-মেয়েকে ঘর থেকে তুলে নিয়ে ‘সংঘবদ্ধ ধর্ষণ’,গ্রেফতার ২

প্রেসিডেন্ট ইস্যুতে কোন হটকারি সিদ্ধান্ত না নেওয়ার আহবান: মির্জা ফখরুল

প্রেসিডেন্ট ইস্যুতে কোন হটকারি সিদ্ধান্ত না নেওয়ার আহবান: মির্জা ফখরুল

ক্ল্যাসিকোয় এমবাপের অন্যরকম রেকর্ড

ক্ল্যাসিকোয় এমবাপের অন্যরকম রেকর্ড

ভাত খাওয়ার পরে এই কাজগুলো ডেকে আনতে পারে বিপদ!

ভাত খাওয়ার পরে এই কাজগুলো ডেকে আনতে পারে বিপদ!

বিমানবন্দরে আটকে দেওয়া হলো সাবেক ডিএমপি কমিশনারকে

বিমানবন্দরে আটকে দেওয়া হলো সাবেক ডিএমপি কমিশনারকে